নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন

আজকে আমরা আপনাদের সামনে বাচ্চাদের জন্য একটি প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব সেটা হচ্ছে নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন? সেই সম্পর্কে। আপনি কি এই নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চেয়ে আমাদের এই পোষ্টে এসেছেন? তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি অনেক উপকার হতে চলেছে। 
নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন

কেননা আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত অবহেলা না করে মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে  নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন এটা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি কেন নবজাতকের ঠোঁট কালো হয়, বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম, শীতে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো ইত্যাদি সম্পর্কে আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ অজানা তথ্যগুলো আপনারা জানতে পারবেন। তাই আমার মনে হয় একেবারেই অবহেলা না করে মনোযোগ দিয়ে এই পোষ্টটি পড়ে জেনে নেওয়া।

নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন

একজন শিশু জন্ম নেওয়ার পর মূলত তার গায়ের রং ৩ রকম ভাবে পরিবর্তন হতে দেখা যায়। যেমন কালো, হলুদ এবং নীল রং হতে পারে। একজন শিশু জন্মের সময় তাদের দেহে মেলালিন (Melanin) নামক একটি উপাদান উৎপাদন কম হয় যার কারণে গায়ের রং হালকা হতে দেখা যায়। এবং নতুন করে মেলানিন উৎপাদন বেড়ে যায়  শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের মাধ্যমে। যার ফলে শিশুর গায়ের রং অনেক সময় কালো হয়ে যায়।

এছাড়াও শিশু জন্ম নেওয়ার পরে যদি তার জন্ডিস দেখা দেয় তাহলে তার জন্মের পর পরই গায়ের রং হালকা হলুদ হতে পারে। তবে বাচ্চা যদি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে তাহলে তার গায়ের রং পরিবর্তন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

তবে রং পরিবর্তন হওয়ার প্রক্রিয়াটি মূলত প্রতিটা বাচ্চার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়ে থাকে এর কারণ আপনার বাচ্চার পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে কিছুটা সময় তো লাগবেই। অনেক সময় অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে মাস খানিক সময়ও লাগতে পারে।

একজন নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হওয়াটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলা চলে। এটা নিয়ে আপনার খুব একটা আতঙ্কিত হওয়া কিংবা ভয় পাওয়ার কারণ নেই। আবার অনেক শিশু কালো হয়ে যায় এটা মুলত বাচ্চাটি জন্মের ২ থেকে ৩ মাস পর্যন্ত হতে পারে।

পরে আবার ধীরে ধীরে আপনার বাচ্চা স্বাভাবিক রং ফিরে আসে। কিন্তু আপনার সন্তানের গায়ের রঙ যদি হলুদ লক্ষ্য করেন তাহলে কিন্তু এট চিন্তা বিষয়। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার নিকটস্থ একজন অভিজ্ঞ বা ভালো শিশু ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

গরমে বাচ্চাদের জন্য কোন লোশন ভালো হবে

অনেকেই আছেন যারা বাচ্চাদের যত্ন শুধু শীতকালেই নেন। কিন্তু শিশুদের ত্বকের যত্ন শুধু শীতকালেই নিতে হবে বিষয়টি কিন্তু এমনটি নয়। বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন গ্রীষ্মকালেও নিতে হবে। কারণ মানুষের ত্বকের লিপিড নামক স্তরটি ভেতরের আদ্রতা ধরে রাখতে অনেক বেশি সহায়তা করে। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে দিকটিকে অনেক ভালো হবে নিতে হবে। তার জন্য অবশ্যই আপনার বাচ্চার ত্বকে বিভিন্ন বেবি লোশন মাখা যেতে পারে।

আপনারা হয়তো জানেন যে শীতকালে আবহাওয়া বেশিরভাগ সময়ই শুষ্ক থাকে। যার ফলে বাচ্চাদের  ত্বকের লিপিড স্তরের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। আপনার বাচ্চাকে লোশন ইউজ করেন তাহলে এটি আপনার বাচ্চার অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজারের যোগান দিবে। এর ফলে ত্বকের সহজে হারিয়ে যাবে না। তার প্রতিশ্রুতিতে বাচ্চার ত্বক থাকবে শরীর এবং কোমল।

বাচ্চাদের ত্বকের প্রয়োজন মোতাবেক সব সময় লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকের মধ্যে এমন একটি ভুল ধারণা রয়েছে সেটি হল যখন শিশুদের শুষ্ক থাকবে সেই সময়টাতেই লোশন ব্যবহার করতে হবে। তবে এই ধারণাটি মোটেও ঠিক নয়। তবে একটি বিষয় অবশ্যই আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে যদি ত্বক আর্দ্র থাকে তবে সেক্ষেত্রেই লোশন ব্যবহার করলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

বাচ্চাদের ঠোঁট কাপে কেন

আমাদের মাঝে এমন অনেক অবিভাবক রয়েছেন যারা খেয়াল করেন যে তাদের বাচ্চার ঠোঁট কাপছে। তাই তারা এই বিষয়ে অনেকের কাছে জানতে চায় কিন্তু সঠিক তথ্য হয়তোবা খুজে পান না। এজন্য শেষমেষ তারা গুগলের কাছে এসে এই বীষয়ে জানতে চাই। তাই আমরা পোষ্টের এই অংশে এই বিষয়ে আলকপাত করেছি । চলুন তাহলে সময়েক্ষেপন না করে জেনে নেই।

একটি শিশুর ঠোট কাপা হচ্ছে খুবই সাধারণ লক্ষণ তবে এটি কিছু কিছু সময় জটিল রূপ ধারণ করতে পারে। এর কারণ ঠান্ডা লাগা বা জন্মগত অসুস্থতা এছাড়াও আরও অন্যান্য কারণ হতে পারে। তাই বাচ্চা যদি জন্মের পর পর এ সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ শিশু ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা এই সমস্যাটি জন্মগত হতে পারে কিংবা জন্মগত ত্রুটির জন্য হয়ে থাকে।

অনেক বাচ্চার খুব বেশি ঠান্ডা লাগার জন্য বাচ্চার ঠোট কাপতে পারে। এটা অনেক সময় বংশগত কারনেও হয়ে থাকে। আপনার আত্মীয়দের মাঝে যদি কারও এই সমস্যাটা থেকে থাকে তাহলে আপনার শিশুরও এটি দেখা দিতে পারে। বলা যায় এটি একটি জেনেটিক জনিত সমস্যা। 

শীতে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো

এখন বাজারে শীতকালে বাচ্চাদের জন্য কয়েকটি ক্রিম পাওয়া যায়। তার মধ্যে কিছু ভালো ক্রিমের নাম আমরা নিম্নে তুলে ধরেছি। যেগুলো ক্রিমগুলো বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারি। আপনার বাচ্চাকে আরও সুন্দর এবং ত্বক শুষ্ক রাখতে সহায়তা করবে যেমনঃ
  • আভিনো
  • সেটাফিল
  • সেবামড বেবি
  • সেবামেড বেবি ক্রিম
  • জনসনের বেবি কোল্ড ক্রিম
  • ভ্যানিক্রিম, ইউসারিন
  • সেটাফিল বেবি ডেইলি লোশন
  • বেবিগ্যানিক্স ডেইলি ময়েশ্চারাইজার
  • ক্রিমহনসনের বেবি কোল্ড ক্রিম
  • অ্যাভিনো বেবি ডেইলি ময়েশ্চার লোশন
  • মুস্তেলা হাইড্রা বেবে বডি লোশন
  • ক্যালিফোর্নিয়া বেবি ক্যালেন্ডুলা ক্রিম
  • Weleda বেবি ক্যালেন্ডুলা ফেস ক্রিম
  • বার্টস বিস বেবি ন্যুরিশিং লোশন ইত্যাদি।
উপরের উল্লখিত ক্রিমগুলো আপনার বাচ্চার জন্য একান্তই দরকার হবে। তবে এই ক্রিমের মধ্যে জনসনের বেবি কোল্ড ক্রিম ও বেবিগ্যানিক্স ডেইলি ময়েশ্চারাইজার এই দুটি ক্রিম সবচেয়ে ভালো। এই ক্রিমগুলো ব্যবহারের ফলে আপনার শিশু্র ত্বক ভালো থাকবে

কি খেলে গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়

আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে গর্ভকালীন সময়ে গর্ভের বাচ্চা গায়ের রং কি খেলে ফর্সা হয়? বা কি খেলে গর্ভের বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয় সেই সম্পর্কে। মূলত বাচ্চার দেহে যখন ক্যালসিয়াম এর অভাব দেখা দেয় ততখন সেই বাচ্চাটি অপুষতিহীনতায় ভোগে। 

আর গর্ভের বাচ্চার দেহকে স্বাভাবিক করতে গরুর দুধ অনেক উপকারি ভূমিকা পালন করে হয়ে থাকে। তাই একজন গর্ভবতীকে এই সময়ে গরুর দুধ খাওয়াটা খুবই জরুরি। তবে মুরগির ডিমের সাদা অংশে নিয়মিত খেলে গর্ভে থাকা শিশুকে ফর্সা করতে অনেক সাহায্য করে।

এতে গর্ভে থাকা শিশু গায়ের রঙ সাদা বা ফর্সা করে এর পাশাপাশি মেধা বিকাশ এ সহায়তা করে। তবে এছাড়াও কমলালেবু ও নারিকেল নিয়মিত খেতে পারলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। ওনেকে বলেন যে চেরি ফল খেলেও খাওয়া বেশ উপকার পাওয়া যায়। কেননা চেরিতে রয়েছে আন্টি অক্সিডেন্ট। যা বাচ্চার গায়ের রঙ ফর্সা করতে ও বাচ্চার পুষ্টি যোগাতে অনেক সাহায্য করে। 

বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম

আপনি যদি আপনার শিশু বাচ্চার ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা করতে চান তাহলে অবশ্যই নিচের দেওয়া ক্রিম গুলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন। চলুন তাহলে এই বিষয়ে এখন বিস্তারিত জেনে নেই। বর্তমান সময়ে বাজারে বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়। 

তবে আপনি যদি না জেনে যেকোনো ধরনের ক্রিম ক্রয় করে নিয়ে এসে বাচ্চার শরীরে ব্যবহার করেন তাহলে হতে পারে সেটি হিতের বিপরীত। কারণ ছোট বাচ্চাদের ত্বক অনেক নমনীয় হয়। তাই যেকোনো জিনিস যেকোনো ধরনের ক্রিম মাখা উচিত নয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যখন ক্রিম ব্যবহার করবেন তখন অবশ্যই এর গুণগত মান দেখে শুনে তারপরে ব্যবহার করতে হবে।

বাচ্চাদের ক্রিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো হয় যদি আপনি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেন। তারপর তিনি যেই ক্রিমটি আপনার বাচ্চাকে ব্যবহার করতে বলবে সেটিই ব্যবহার করা উচিত। তবে এই পাঠে আমরা কিছু বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম গুলোর নাম উল্লেখ করো। আপনি যখন একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন তখন তিনি এই সকল ক্রিমের ব্যবহারের কথা উল্লেখ করবেন। বাচ্চাদের ফর্সা হওয়ার ক্রিম গুলো হলোঃ
  • ডাব ক্রিম
  • ফেইস ক্রিম
  • নেভিয়া ক্রিম
  • ইভেনো বডি লোশন
  • জনসন বেবি লোশন
  • শিয়া বাটার লোশন
  • কোডোমো ফেইস ক্রিম
  • প্যারাসুট জাস্ট ফর বেবি ইত্যাদি।

লেখকের শেষ বক্তব্যঃ নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন

ইতিমধ্যে আমরা নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন হয় কেন এই  নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আলোকপাত করেছি। আপনারা হয়তো এই সম্পর্কে এতক্ষণে ক্লিয়ার ধারণা পেয়ে গেছেন। তবে আপনার যদি এই নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন নিয়ে বিষয়ে কোন ধরণের মতামত বা প্রশ্ন থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

নবজাতকের গায়ের রং পরিবর্তন সম্পর্কিত আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। এতে তারাও এই বিষয়ে বিস্তারিত অজানা তথ্যগুলো জেনে নিতে পারবেন। বিভিন্ন মেডিসিন বা ওষুধ সম্পর্কিত অন্যেন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। এতক্ষণ সময়  ধরে সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url